বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে চবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। সকাল ১০:০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে সাথে নিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণ করে দেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ও মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে। পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে চবি শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধ চত্বর থেকে শোক র্যালি শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু চত্বরে শেষ হয়। অতঃপর মাননীয় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে সাথে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর চবি উপাচার্য দপ্তরের সভাকক্ষে “শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে। চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসানের সভাপতিত্বে এবং চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ সেকান্দর চৌধুরী। পুস্পস্তবক অর্পণ, র্যালি এবং আলোচনা সভায় চবি সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, কলেজ পরিদর্শক, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী নির্দেশনা ও পরামর্শ কেন্দ্রের পরিচালক, অফিস প্রধানবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, চবি সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মাননীয় উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বিনম্র চিত্তে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহীদ সদস্যবর্গ, মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ত্রিশ লক্ষ বীর বাঙালি এবং শহীদ জাতীয় চারনেতাকে বিনম্র চিত্তে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত দু’লক্ষ জায়া-জননী-কন্যার প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা হলেন জাতির বিবেক’। বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের মেধা, প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা দিয়ে সমাজ-রাষ্ট্রকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সহায়তা করেন। তিনি আরও বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বর্বরোচিত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা। পরাজয় নিশ্চিত জেনে জাতিকে মেধা শূণ্য করার জন্য দেশীয় দোসরদের সাথে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনার দল এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ জঘণ্য হত্যাকান্ডের জন্য বাঙালি জাতি যুগ যুগ ধরে তাদেরকে ঘৃণা করবে। মাননীয় উপাচার্য ভবিষ্যতে কোনো অপশক্তি যেন ‘জাতির বিবেক’ বুদ্ধিজীবীদের ওপর নৃশংসতা চালাতে না পারে সেদিকে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান।
অনুষ্ঠান শুরুতে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মসজিদে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত, দুপুর ১২:০০ টায় চবি কেন্দ্রিয় মন্দিরে গীতপাঠ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের চিরশান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের স্ব স্ব উপাসনালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার সদগতি কামনা করে প্রার্থনা করা হয়।
—————
স্বাক্ষরিত/-
ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য)
রেজিস্ট্রার অফিস,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।